রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩, ০৪:০৭ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:: দেশের ৩ মোবাইল অপারেটরের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকার পাবে। তরঙ্গ বরাদ্দ, রাজস্ব বণ্টন, লাইসেন্স নবায়ন ফিসহ বিভিন্ন খাতে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের কাছে এই টাকা পাওনা আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির। টাকা দিতে যত দিন যাবে, বিলম্ব মাশুল (লেট ফি) তত বাড়বে।
১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ দেশের তিন মোবাইল অপারেটরকে বিভিন্ন ফি ও মূল্য সংযোজন কর পরিশোধ করতে আদেশ দেন। আজ রোববার রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কর্মকর্তারা। সেখানে বলা হয়, গত ২২ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণফোনের কাছে ১ হাজার ১৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, বাংলালিংকের কাছে ৬২৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, রবির কাছে ৬২৪ কোটি ৬৩ লাখ (এর মধ্যে এয়ারটেল বাবদ ৫৯ কোটি ৫ লাখ টাকা)।
বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বলেন, মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির পাওনা টাকার পুরোটা না দিয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আকারে অন্তর্ভুক্ত করে টাকা দিয়েছিল। তবে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের কাছ থেকে প্রাপ্য আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেলিকম খাতে জনগণকে ফাঁকি দিয়ে কেউ যেন কোনো কিছু করার সুযোগ না পায়, সে লক্ষ্যে বিটিআরসি কাজ করছে বলে জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
সব অপারেটরের মুনাফা এক রকম নয়। তাদের ওপর কোনো নির্দেশনা এলে শেষ পর্যন্ত তা গ্রাহকের ঘাড়ে গিয়েই চাপে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, অপারেটরগুলোর আর্থিক নিরীক্ষা বিটিআরসিও করে থাকে। গ্রাহকের তুলনায় যে রাজস্ব আসার কথা, তা কারোরই কম না। তবে সবার মুনাফা আনুপাতিক হারে সমান নয়।
বিটিআরসির কমিশনাররা বলেন, এটা সরকারের রাজস্ব, জনগণের টাকা। কোনো চাপ তৈরির জন্য এবং অযৌক্তিক কোনো দাবিও না। বিটিআরসি তার প্রাপ্য বুঝে নেবে।
তিন অপারেটর বাদেও সরকারি মালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটকের কাছেও বিটিআরসি ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সে টাকা আদায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি বিটিআরসি কর্মকর্তারা।
বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের পরিচালক তারেক হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ, কমিশনার মুশফিক মান্নান চৌধুরী, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুণ্ডু, বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা- ই-রাকিবসহ প্রমুখ।
এদিকে বিটিআরসির সংবাদ সম্মেলনের পর এক বিবৃতিতে অ্যামটবের মহাসচিব বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, ‘বেতার তরঙ্গের মূসক আদায় এবং মূসক রেয়াত প্রসঙ্গে মহামান্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বক্তব্য প্রদান সমীচীন নয়। আমরা বিশ্বাস করি, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আদালত পূর্ণাঙ্গ রায়ে মূসক আদায়ের বিষয়ে ন্যায়সংগত নীতিগত দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।’