মঙ্গলবার, ০৫ Jul ২০২২, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
অনলাই ডেস্কঃ- শুক্রবার কাবিনের উদ্দেশে বরের বাড়ি থেকে হাসিমুখে কনের বাড়ি ঢাকার কামরাঙ্গীরচর যাচ্ছিল দুটি মাইক্রোবাস। কিন্তু পথিমধ্যে শ্রীনগরের ষোলঘর বাসস্ট্যান্ডের কাছে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের ৯ জনের মৃত্যুতে শেষ হয়ে গেল সবকিছু।
শুধু বরের বাড়ি নয়, যেন শোকাচ্ছন্ন পুরো কনকসার ইউনিয়নে। একটি দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এতো মৃত্যু তারা কখনও দেখেননি। স্বজনরা হাসপাতাল থেকে মরদেহ আনার পর থেকেই প্রতিবেশীরা ভিড় করছেন শোকাস্তব্ধ পরিবারের বাড়িতে। বাড়ির সামনে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই প্রতিবেশীদের। তবুও পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বইছিল বিয়ে বাড়ির আনন্দ।
বর রুবেল বেপারীর বাবা আব্দুর রশিদ বেপারী (৭০), বোন লিজা (২৪), ভাগনি তাবাসসুম (৬) ও ভাবী রুনা (২৪), ভাবীর বোন রেনু (১২), বরের ভাতিজা তাহসান (৪), ফুপা কেরামত বেপারী (৭০), বরের প্রতিবেশী মফিজুল মোল্লা (৬৫), মাইক্রোবাসচালক বিল্লাল (৪০) নিহত হন।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কনের নাম নিশি। সে ঢাকার কামরাঙ্গীচরের আব্দুর রশীদের মেয়ে। আজ দুপুর পৌনে ১টার দিকে কাবিনের জন্য কনের বাড়িতে বর রুবেল ও তার স্বজনরা দুটি মাইক্রোবাসে যাত্রা করে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রোবাসে যাত্রী ছিলেন ১২ জন। যার মধ্যে ড্রাইভারসহ ৯ জন মারা গেছেন।
বর রুবেলের চাচাতো বোনজামাই আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমার ঢাকা থেকে এই বিয়েতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসি। বিয়ের আনন্দ একটি দুর্ঘটনার কারণে শেষ হয়ে গেছে।
একমাত্র ছেলে ও স্ত্রীকে হারিয়ে স্তব্ধ বরের বড় ভাই সোহেল বেপারী। তিনি বলেন, আল্লাহ যাতে কাউকে এ রকম কষ্ট না দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর রুবেলের খালাতো ভাই জাহাঙ্গীর (৪২), প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন (৫২), সোহরাব (৫৫) ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণগাঁও স্কুল মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর হলদিয়া সাতঘরিয়া কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হবে।