রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
মো: রহমাতুল্লাহ(পলাশ): মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। কিন্তু এই মানুষই আবার কর্মের কারণে বর্তমান সময়ে সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব বলে পরিগণিত হয়। যে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ থাকে না, তাকে মানুষ বলা যায় না। মানুষ বলতে মানুষের ভেতর মানবীয় গুণ থাকতে হয়, মানবিক আচরণ থাকতে হয়। শুধুমাত্র মনুষ্যকূলে জন্ম নিলেই মানুষ হওয়া যায় না। মানুষ হতে হলে মানবিক গুণ, নৈতিকতা, সহিষ্ণুতা থাকতে হয়। চিন্তা-চেতনার বিকাশ, বিবেকবোধ, কান্ডজ্ঞান আর বিচার-বুদ্ধির ক্ষমতার কারণে মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।
মানুষ মনুষ্যত্বের অধিকারী হবে সেটাই স্বাভাবিক। মানবতা বা মনুষ্যত্ববোধ না থাকলে মানুষ কখনই মানুষ নয়। কিন্তু বর্তমানে প্রাত্যহিক লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, উগ্রতা, স্বার্থপরতা, ক্রোধ প্রভৃতি কারণে মানুষের মনুষ্যত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। এক কথায় মনুষত্ব আজ নির্বাসনে।
এই পৃথিবীতে সন্তানের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল হল তার বাবা ও মা। একজন মানুষ যদি পৃথিবীর সব মানুষ কর্তৃক অবহেলিত হয় বা তার কাছে সুন্দর পৃথিবী যখন অন্ধকারে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তখন হতাশার চাদরে আবৃত সেই মানুষের কাছে বাবা-মা আশার প্রদীপ ও নিরাপদ আশ্রয় হয়ে ওঠে। কিন্তু বর্তমান সমাজে নিজ পরিবারই যেন নিরাপত্তাহীন।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজ পিতা বা মাতা সন্তানকে হত্যা করছে। আজ যেন আমরা পাশবিকতার ষোলকলা পূর্ণ করছি। আমাদের মধ্যে আজ যেন মনুষ্যত্বের কিছুই নেই। আমরা আজ যে মনুষ্যত্বহীন সমাজে বাস করছি তার দায় কিন্তু আমাদেরই নিতে হবে। আমরা দিনে দিনে আমাদের সমাজটাকে একটা চরম বর্বরতার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি।
মানুষ মনুষ্যত্ববোধ যখন চরমভাবে লোপ পায় তখন হয়ে ওঠে হায়েনা। তখন সমাজে দ্রুত বেড়ে যায় অপরাধ প্রবণতা। গুম ,খুন ,ধর্ষণ, লুটপাট,চুরি,ডাকাতি,দুর্নীতি সহ সমাজে অশান্তি সৃষ্টি ইত্যাদি কাজ প্রতিনিয়তই সংঘটিত হতে থাকে।
মানুষের মধ্যে জাগ্রত হোক মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া, মমতা। মানবতা ও মনুষ্যত্বের বিষয়টি পুরোপুরি চিন্তা চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল। মানুষ একমাত্র তাদেরই বলা যায় যাদের মানবতা এবং মনুষ্যত্ব জ্ঞান বলে কিছু একটা আছে। কামনা করছি আমাদের দেশে শিশুর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতন, শিশু হত্যা নেমে আসুক শূন্যের কোঠায়। মানুষের বিবেক জাগ্রত হোক। প্রায় নির্বাসিত মনুষত্ব আবারো ফিরে আসুক।