শনিবার, ১০ Jun ২০২৩, ০২:১১ অপরাহ্ন
মদিনা কন্ঠঃ- তৃষ্ণা মেটাতে লেবুর শরবতের তুলনা নেই। তবে ঘুম থেকে উঠেই কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিছু আশা করা যায়। এরপর ১৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর সকালের নাস্তা খান। এর ফলে শরীর অধিক পরিমাণে পুষ্টি শোষণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্বজুড়ে লেবু খুবই জনপ্রিয় এবং প্রতিটি দেশের রান্নাঘরে এটি একটি অপরিহার্য খাবার। লেবু ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ফাইবার। তাছাড়া এটি উদ্ভিজ্জ যৌগ খনিজ এবং দেহের জন্য প্রয়োজনীয় তেলে সমৃদ্ধ করে।
নিচে আলোচনা করা হলাঃ-
১। শক্তি বৃদ্ধি: লেবুর রস পরিপাক নালীতে প্রবেশ করে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি মানসিক চাপ কমাতে ও মেজাজ ফুরফুরা করতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।২। কিডনির পাথর: লেবুতে উপস্থিত লবণ বা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট’ নামক পাথর গঠনে বাধা দেয়। সবচেয়ে সাধারণ কিডনি পাথরগুলোর মধ্যে এটি একটি।
৩। লিভার পরিষ্কার রাখে: লেবুতে বিদ্যমান সাইট্রিক অ্যাসিড কোলন, পিত্তথলি ও লিভার থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। ৪। ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধঃ- ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে লেবুর রস। ৫। হজমে সাহায্য করেঃ- লেবুর রস হজমে ব্যাপক সাহায্য করে। সেইসঙ্গে পরিপাক নালী থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়।এটি কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।
৬। ত্বক পরিষ্কার করে: লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের কোষের ক্ষয় প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, এই উপাদান শরীরে কোলাজেন তৈরি করে। যা মুখের অবাঞ্ছিত দাগ দূর করে ঔজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে ৭। ওজন হ্রাস: লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। যা ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খালি পেটে লেবুর রস খান, তাদের ওজন দ্রুত হ্রাস / কমে পায়। করে প্রতিদিন সকালে লেবুর রস খান ওজন বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা না।
৮। মূত্রনালীর সংক্রমণ দূর: যদি মূ ত্রনালীতে সংক্রমণ ঘটে। তাহলে প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস পান করুন। এটি আরোগ্য লাভে সাহায্য করবে। ৯। চোখের স্বাস্থ্য: লেবুর রস চোখের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করে এবং চোখের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে।১০। ক্যান্সার প্রতিরোধে: লেবু অনেক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার।
১১। ক্ষারের সমন্বয়: শরীরে হাইড্রোজেনের পরিমাণের উপর অনেকাংশে সুস্থতা নির্ভর করে। সর্বমোট পিএইচ বা পাওয়ার অফ হাইড্রোজেন স্কেল হল ১ থেকে ১৪। মানবদেহে ৭ মাত্রার পিএইচ থাকা স্বাভাবিক। এর থেকে কম বা বেশি হলে শরীরে রোগের বিস্তার হতে পারে। অ্যাসিডিক বা ক্ষারীয় ফল হলেও লেবু মানবদেহে পিএইচ’য়ের মাত্রা সমন্বয় করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা বেশি মাংস, পনির বা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের জন্য লেবু সবচেয়ে বেশি উপকারী।
১২। রক্তবাহী ধমনী ও শিরা গুলোকে পরিষ্কার করে লেবু পানি শরীরের রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার রাখে।১৩। গর্ভবতী নারী ও গর্ভের সন্তানের জন্য ভীষণ উপকারে আসে গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই ভালো লেবু পানি। এটা শুধু নারীর শরীরই ভালো রাখে না বরং গর্ভের শিশুর জন্য ও বেশী উপকার করে। লেবুর ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করে। মাকেও গরভকালে রোগ বালাই থেকে দূরে থাকে।
১৪। দাঁত ব্যথা কমাতেঃ দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। দাঁত ব্যথা কমায়।১৫। বুক জ্বলা পড়া দূর করে: যাদের এই সমস্যা আছে রোজ আধা কাপ পানির মাঝে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।১৬। ওজন দ্রুত কমাতে: ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করে। লেবুতে থাকে পেকটিন ফাইবার যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
সঠিক উপায়ে পানের নিয়মঃ প্রথমে চিনি ছাড়া এক গ্লাস গরম পানিতে একটি লেবুর রস মেশান। লেবুর রস বের করার জন্য জুসারও ব্যবহার করতে পারেন। এ থেকে লেবুর কিছু তেলও বের হবে যা কাজে লাগবে।
অবশ্যই ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পান করবেন। সকালের নাশতার এক ঘণ্টা আগে খাওয়া ভালো। দীর্ঘমেয়াদি উপকারিতা পেতে নিয়মিত লেবু পান করতে পারেন। বিঃ দ্রঃ- বিস্তারিত আরও জেনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ পানীয় পান করবেন।